সিলেটে গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা। গত ২৯ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত হরতাল ও পরবর্তীতে অবরোধে সহিংসতা ও ভাঙচুর করায় গত দুই সপ্তাহে সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানায় ২৪ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি-জামায়াতের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার করেছে পুলিশ।এদিকে, পুলিশ গ্রেফতারের নামে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, কোনো নিরীহ বা নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হচ্ছে না ।সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশের তথ্যমতে, সিলেট জেলা পুলিশের অধীনস্থ থানায় ৭ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর অন্য ১৭টি মামলা মেট্রোপলিটনের থানাগুলোদে দায়ের করা হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো.আজবাহার আলী শেখ ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শেখ মো.সেলিম। জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬টি থানায় বিএনপি-জামায়াত হরতাল এবং অবরোধে সহিংসতা ও ভাঙচুর করায় ১৭টি মামলা করা হয়েছে। দায়ের হওয়া ১৭টি মামলার মধ্যে অবরোধ চলাকালে গাড়ি ভাঙচুর করায় দুজন ব্যক্তি ২টি মামলা করেন।অন্য মামলার মধ্যে কোতোয়ালি থানায় ৫টি, জালালাবাদ থানায় ১টি, বিমানবন্দর থানায় ১টি, দক্ষিণ সুরমা থানায় ৬টি, শাহপরান থানায় ১টি এবং মোগলাবাজার থানায় ৩টি মামলা পুলিশ বাদি হয়ে দায়ের করেছে। এসব মামলয় বিএনপি-জামায়াতের ৩৮৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৬৬০ থেকে ৮১২ জনকে।অপরদিকে, হরতাল ও অবরোধ চলাকালে সহিংসতা ও ভাঙচুর করার অপরাধে সিলেট জেলা পুলিশের আওতাধীন থানাগুলোতে ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।এদিকে বিএনপি বলছে, পুলিশ মামলার অজুহাতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে রাতে তল্লাশি চালাচ্ছে। অজ্ঞাতনামা আসামি অসংখ্য থাকায় নেতা-কর্মীদের অনেকে গ্রেফতার এড়াতে বাড়ি ছাড়া হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিন রাতে পুলিশ গ্রেফতার অভিযান চালানোয় অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি না হওয়া সত্ত্বেও গণহারে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর নামে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে।পরিবারের সদস্যরাও আতঙ্কে আছেন।এব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে না পেয়ে পরিবারকে হয়রানি করছে। যাকে যেখানে পাচ্ছে সেখান থেকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক নেতাকর্মী বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো.আজবাহার আলী শেখ পিপিএম জানান, পুলিশ মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতারেই কেবল অভিযান চালাচ্ছে। কোনো নিরীহ বা নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হচ্ছে না। ভয়ভীতি বা আতঙ্ক তৈরি করা পুলিশের কাজ নয়। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তৎপর আছে।সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শেখ মো.সেলিম বলেন, জনগণের জান মালের নিরাপত্তার জন্য সিলেট জেলা পুলিশ মাঠে রয়েছে। জেলা পুলিশ কখনো কাউকে হয়রানি করেনি আর করবেও না।তবে, কেউ যদি আইনশৃঙ্খলার ব্যতয় ঘটায় বা ব্যক্তিগত জানমালের জন্য হুমকির কারণ হয় সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
Leave a Reply