কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে আনজুমানে আল ইসলাহ’র বিবৃতি
চাকুরীর ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে খুন, যুলুম-নির্যাতন, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ। একই সাথে সৃষ্ট ঘটনায় নিহতদের মাগফিরাত কামনা ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছে। পাশাপাশি সকল হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার, নিহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান, যুলুম-নির্যাতন বন্ধসহ ছাত্রদের হয়রানি না করার আহবান জানিয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোটা সংস্কারে ছাত্রদের দাবী ন্যায্য ছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায় থেকেও তাদের দাবির ন্যায্যতা সুষ্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু দায়িত্বশীলদের দীর্ঘসূত্রিতা ও ছাত্র আন্দোলনকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা না করার কারণে দেশে জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, যা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা, ছাত্র জনতাকে অন্যায়ভাবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে হয়রানি না করা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনতিবিলম্বে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং রিমান্ডের নামে নিরীহদের হয়রানি না করার পাশাপাাশি অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানানো হয়। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থাকারও আহবান জানানো হয়। ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সুযোগে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত অসংখ্য কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়ানোর প্রেক্ষিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও দায়িত্বশীলদের এক জরুরী বৈঠকের সিদ্ধান্তক্রমে দায়িত্বশীলদের অবগতির জন্য এই বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা:
এ দিকে গত বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আলিম-উলামাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার সংবাদে কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় ধর্মমন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী এমপি’র যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে এক ব্যাখ্যায় বলা হয় যে, পত্রিকায় প্রকাশিত বক্তব্য প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী উপস্থিত আলিম-উলামার বক্তব্য ও সিদ্ধান্তের অংশবিশেষ। মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বৈঠকের শেষ পর্যায়ে তার বক্তব্যে বলেছেন, আপনাদের দীর্ঘ আলোচনায় দেশের শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা ও ছাত্রদের সহিংসতা থেকে বিরত রাখাসহ যেসকল বিষয় ফুটে উঠেছে তার সারসংক্ষেপ ধর্মমন্ত্রী মহোদয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট পৌঁছাবেন। তিনি আরো বলেন, আলিম-উলামাদের গ্রহণযোগ্যতা জনগণের নিকট রয়েছে। তাই আলিমগণের উচিত স্বকীয়তা বজায় রেখে ন্যায়ের পক্ষে, যুলুমের বিপক্ষে অবস্থান করা। মানুষ হিসাবে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ভুল হওয়া স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে সরকারেরও ভুল হতে পারে। তাই সরকারকে সুপরামর্শ দেওয়ার সদিচ্ছা থাকাও প্রয়োজন। তিনি কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের দাবি যথার্থ উল্লেখ করে সরকারকে সহনশীল হওয়া ও মূল দাবী পূরণ হওয়ার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাওয়ার আহবান জানান। তিনি বিচারবহিভর্‚ত সকল হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি করেন এবং কারাবন্দী আলিম-উলামা ও গ্রেফতারকৃত নিরীহ ছাত্র জনতার মুক্তির পাশাপাশি ঢালাওভাবে কাউকে গ্রেফতার না করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
বিবৃতিতে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভ্রান্ত না হয়ে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়।
Leave a Reply