ডেস্কঃ একদিনে বন্ধ করে দেওয়া হল ১২টি প্রাইভেট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজি ল্যাব। শনিবার হবিগঞ্জের মাধবপুর, চুনারুঘাট ও শায়েস্তাগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে পৃথক অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে পরিচালিত হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ল্যাব সিলগালা করে প্রশাসন। এসময় দুটি হাসপাতালকে লাইসেন্স নবায়ণের জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয়। অন্যতায় এগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
মাধবপুর প্রতিনিধি তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী জানান, শনিবার (২৮ মে) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম মঈনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত মাধবপুর পৌরসভার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালগুলোতে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানকালে তিতাস মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল-২ (উসমান খান বিল্ডিং), প্রাইম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এ্যাপোলো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ন না করায় এবং হক ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সেগুলো বন্ধ করে গেটে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল পাঁচটি বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সের জন্য আবেদনই করেনি। পুরোপুরি অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়ে আসছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয় এবং গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্টরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করা সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএইচএম ইশতিয়াক মামুন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নুরুল হক ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, মাধবপুরে ৫টি, চুনারুঘাট ও শায়েস্তাগঞ্জে ৫টি এবং বাহুবলে দুটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হবে।
চুনারুঘাট প্রতিনিধি জানান, শনিবার (২৮ মে) বিকেলে চুনারুঘাটে অনিবন্ধিত পাঁচটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতাল সিলগালা করে দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।সেই সঙ্গে ৩ টি হাসপাতালকে তাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য ১ মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ পরিচালিত এ অভিযানে সরকারি নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে গড়ে ওঠা এম কে হাসপাতাল, ঢাকা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, গ্রীণ লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকার পিপলস মেডিকেল সেন্টার ও সুর্যের আলো হাসপাতাল সিলগালা করে দেওয়া হয়।
চুনারুঘাট উপজেলার উত্তর বাজার, মধ্যবাজার ও শায়েস্তাগঞ্জ নতুনব্রীজ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নুরুল হক।
এ সময় জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী ও চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করে চুনারুঘাট ও শায়েস্তাগঞ্জ থানার একদল পুলিশ।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশ মোতাবেক জেলা জুড়ে অবৈধ প্রাইভেট হাসপাতালের তালিকা তৈরি করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।শনিবার বিকেলে নিবন্ধন না থাকায় চুনারুঘাটের পাঁচটি হাসপাতালকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিবন্ধন পাওয়ার পর এগুলো আবার চালু করতে পারবে। এছাড়াও ৩ টি হাসপাতালকে তাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য ১ মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজার থেকে স্টাফ রিপোর্টার এম এ হামিদ জানান, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে চালানো দু’টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব সিলগালা করে দিয়েছে প্রশাসন।
শনিবার (২৮ মে) বিকেলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে এ অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান হয়।
অভিযানে শ্রীমঙ্গল শহরের কালিঘাট সড়কের ইনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও স্টেশন সড়কের রেটিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব বন্ধ করে সিলগালা করে দেয়া হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. পার্থ সারথী সিংহ, সেনেটারি ইন্সপেক্টর বিনয় সিংহ রাউথিয়া, শ্রীমঙ্গল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ইউসুফসহ শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের একটি দল।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী শ্যামল সিলেটকে জানান, দুটি প্রতিষ্ঠানে ল্যাব পরিচালনার জন্য নিবন্ধিত নয়। তাই এ ল্যাবের অংশগুলো সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। তবে ডাক্তারের চেম্বারগুলো খোলা রয়েছে।
এদিকে দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর বাজারের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুন্না সিনহার নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় মৃত্তিকা ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ জানান, জেলার সব উপজেলায় এ অভিযান চালানো হবে।
Leave a Reply