বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় হামুন উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার রাত ১টায় উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে। এবং দুর্বল হয়ে সাতকানিয়া, চট্টগ্রামে স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি স্থলভাগের অভ্যন্তরে আরও অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।মঙ্গলবার রাত সোয়া ১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৫ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।তাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭০–৮০ কিলোমিটার। সন্ধ্যা ৭টার দিকে হামুন প্রবল বেগে উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। ঝড়ের তাণ্ডবে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে বিপুলসংখ্যক বাড়িঘর ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায়। অনেক ঘরবাড়ির চালা উড়ে গেছে। বড় বড় অনেক গাছ ভেঙেছে। উড়ে গেছে দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনা।মহেশখালী ও কুতুবদিয়াতেও ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে হামুন। সেখানেও বহু গাছ ভেঙেছে। শেখ খবর পাওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার পৌরসভা, মহেশখালী ও চকরিয়ায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পুরো কক্সবাজার অন্ধকারে আছে।সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ‘হামুনে’ রূপ নেয় গত সোমবার। বুধবার দুপুরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত করবে বলে শুরুতে আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, হামুনে পরিণত হওয়ার পর দ্রুত ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগোতে থাকে। ফলে তা শক্তি অর্জনের জন্য তেমন সময় পায়নি।এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে— বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।
Leave a Reply